প্রশ্ন: সহিহ হাদিস অনুযায়ী বিতির সালাতের (নামায) নিয়ম কি?

উত্তর: আমরা অনেকেই জেনে-শুনেও মাযহাবী দোহাই দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহীহ সুন্নাত পরিত্যাগ করি, যা অত্যান্ত অবাঞ্চনীয়। আমরা আজ যেগুলো জানবো;

♧বিতির পড়া কি ফরয/ওয়াজিব না সুন্নত ?

♧বিতির পড়ার সওয়াব কতটুকু ?

♧বিতির সালাত কাযা পড়া যাবে ?

♧বিতির সালাত কত রাকাত ?

♧বিতির কিভাবে পড়তে হবে ?

♧কুনুত পড়া কি ওয়াজিব ?

●“বিতির” শব্দের অর্থ কি ?

বিতির শব্দের অর্থ হলো বেজোড় । আর বেজোড় সংখ্যা হলো ১, ৩, ৫, ইত্যাদি ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিতির সালাত হিসেবে ১ রাকাত, ৩ রাকাত, ৫ রাকাত, ৭ রাকাত, এমনকি ১১ রাকাতও পড়েছেন।

অনেকে হয়তো প্রথম শুনছেন বা মনে করতে পারেন ১ রাকাত আবার সালাত আছে নাকি ? লেখক সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করার আগে যাচাই করে নিন, আপনি কুরআন-হাদীস পড়বেন না, জানবেন না সেটা আপনার দোষ । এখন কেউ যদি কুরআন, সুন্নাহ থেকে কিছু বলার কারণে আপনার কাছে অদ্ভুত লাগে সেটা আপনার ব্যর্থতা । ১ রাকাত বিতির পড়া যায় এটা জানার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না । ইমাম বুখারী বিতির সালাত সম্পর্কে সবার প্রথম যে হাদীস নিয়ে এসেছেন সেখানেই উল্লেখ আছে।

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সকল অংশে (অর্থাৎ বিভিন্ন রাতে বিভিন্ন সময়ে) বিত্‌র আদায় করতেন আর (জীবনের) শেষ দিকে সাহ্‌রীর সময় তিনি বিত্‌র আদায় করতেন।

বিতির পড়া কি ফরয/ওয়াজিব না সুন্নতঃ

যদিও আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিতির সালাতকে ওয়াজিব মনে করে কিন্তু বিতর সালাত আসলে সুন্নাহ মুআক্কাদাহ। ফরজ বা ওয়াজিব নয়। আর ওয়াজিব ও ফরয নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবা তাবিঈদের নিকট তথা হাদীসের দলিল অনুযায়ী একই বিষয়।

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, বিতর ফরজ সালাতের মত বাধ্যতামূলক নয় বরং তা সুন্নাত যা প্রবর্তন করেছেন রাসূল (সঃ)। হাদীসটি বর্ণনা করেছেন নাসাঈ ১৬৫৮, তিরিমিযী হাদীস নং ৪৫৩, মুসান্নাফ ইব্‌নু আবী শাইবাহ ২/২৯৬, মুসান্নাফ ইব্‌নু আব্দুর রাজ্জাক ৩/৩ হাদীস নং ৪৫৬৯, সহীহ সুনানু নাসাঈ ১/৩৬৮। যে সমস্ত হাদীস ওয়াজিব সাব্যস্ত করার জন্য পেশ করা হয় তা দূর্বল কিংবা অস্পষ্ট। উপরোক্ত হাদীসের মত স্পষ্ট নয়।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ফরয সালাত কখনোই সওয়ারীর (গাধা বা ঘোড়ার) পিঠে চড়ে পড়তেন না, শুধু নফল সালাত পড়তেন। কিন্তু তিনি বিতির সালাত সওয়ারীর উপর পড়েছেন । এ থেকে প্রমানিত হয় বিতির সালাত ফরয বা ওয়াজিব নয় ।

বুখারী, মুসলিম, দারা কুতনী ১৬১৭ ।

●বিতির পড়ার সওয়াব কতটুকুঃ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

“আল্লাহ একটি নামায দান করে তোমাদেরকে বিশেষ সুযোগ করে দিয়েছেন যা তোমাদের জন্য লাল রংয়ের উটের চাইতে উত্তম । সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল ! সেটা কোন নামায ? তিনি বললেন, ‘বিতির নামায’ যা পড়া হয় ইশা নামাযের পর থেকে ফযর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ।”

আবু দাউদঃ ১৪১৮, তিরমিযীঃ ৪৫২, ইবনে মাজাহ, দারেমী, হাদীসটি সহীহ।

* বর্তমান যুগে যেমন দামি গাড়ি মার্সিডিস বেঞ্চ বা ফেরারী ঠিক তেমনি, তখনকার যুগে লাল রংয়ের উটের দাম অনেক বেশি ছিলো ।

●কখন পড়তে হবে ?

ইশার পর থেকে ফযরের আগে পর্যন্ত পড়া যাবে । তবে রাতের সর্বশেষ সালাত হিসেবে বিতির পড়তে হবে । বিতির রাতের শেষ অংশে পড়া বেশি সওয়াব, তবে নিয়মিত উঠার অভ্যাস না থাকলে বা শেষ রাত্রে উঠার নিশ্চয়তা না থাকলে ঘুমানোর আগেই পড়ে ফেলতে হবে ।

আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিত্‌রকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত করবে। সহিহ বুখারি – ৯৯৮

●বিতির সালাত কাযা পড়া যাবেঃ

বিতির ফযরের আগে পড়তে না পারলে ফযরের পরে বা সকাল বেলায় সুযোগ মতো পড়া যাবে । এনিয়ে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এমনকি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজে সকাল বেলা বিতির কাযা পড়েছেন (তাবারানী) এবং (তিরমিযী মুরসাল হিসেবে)

●বিতির সালাত কত রাকাতঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কয়েকভাবে বিতির পড়েছেন । তিনি বিতির ১ রাকাত, ৩ রাকাত, ৫ রাকাত, ৭ রাকাত, ৯ রাকাত এমনকি ১১ রাকাত পড়েছেন । এই সবগুলোই সুন্নত । কারো ইচ্ছা হলে সে এর যেকোনো একটা পড়তে পারে ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “রাতের সালাত (তারাবীহ/তাহাজ্জুদ/কিয়ামুল লাইল) ২ রাকাত ২ রাকাত করে । অতঃপর তোমাদের কেউ ফযর হওয়ার আশংকা করলে সে যেনো এক রাকাত বিতির পড়ে নেয়।

বুখারী ও মুসলিম ।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “বিতির হলো শেষ রাতে এক রাকাত” ।(মুসলিম)

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “বিতির প্রত্যেক মুসলমানের উপর হক্ক । সুতরাং যে ৫ রাকাত পছন্দ করে সে ৫ রাকাত পড়ুক, যে ৩ রাকাত পছন্দ করে সে ৩ রাকাত পড়ুক, যে ১ রাকাত পছন্দ করে সে ১ রাকাত পড়ুক” ।

ইবনে মাজাহ, মিশকাত ১২৬৫ ।

●বিতির কিভাবে পড়তে হবেঃ

১ রাকাত পড়ার নিয়ম :

প্রথমে নিয়ত করবে (নাওয়াইতু… পড়ে না, অন্তরে নিয়ত করে) এরপর সানা পরবে, অতঃপর আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতিহা পড়বে। এর পরে যে কোনো একটা সুরা মিলাবে। সুরা মিলানোর পর দুয়া কুনুত পড়বে।

কুনুত দুইভাবে পড়া যায়, রুকুর আগে ও রুকুর পরে, তবে অনেক আলেম এর মতে রুকুর পরে পড়াই উত্তম, তাই রুকুর পরে পড়ার অভ্যাস করা যেতে পারে। কিন্তু মেশকাত শরীফ -১২১৩ , ঊনবিংশ অধ্যায় এর দোয়া কুনুত পরিচ্ছেদ এ উল্লেখ আছে নবীজী (সা:) এক মাস শুধু রুকুর পরে কুনুত পড়েছিলেন, সেখেত্রে দুইভাবেই নামাজ হবে ইন-শা-আল্লাহ! 

আমাদের দেশে কুনুত পড়ার আগে আল্লাহু আকবার বলে হাত তুলে আবার হাত বাঁধার যে নিয়ম প্রচলিত আছে তা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে প্রমানিত না। তাই আল্লাহু আকবার বলে হাত না তুলে কিরাতের পরে সরাসরি দুয়া কুনুত পড়তে হবে।

আর রুকুর পরে কুনুত পরতে চাইলে, কিরাতের পরে রুকু করবেন, রুকু থেকে দাঁড়িয়ে সামিয়াল্লাহ হুলিমান হা’মীদাহ, রাব্বানা লাকাল হা’মদ বলার পরে দাঁড়ানো অবস্থাতে মুনাজাতের মতো হাত তুলে কুনুত পড়বেন। কুনুত পড়ার সময় মুনাজাত করার মতো হাত তুলে কুনুত পড়া মুস্তাহাব । কুনুত শেষ হলে আল্লাহু আকবার বলে সিজদাতে যাবেন । দুই সিজদা করার পর আর দাঁড়াবেন না (কারণ আপনি ১ রাকাত বিতির পড়ছেন)। আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ ও দু’আ মাছুরা পড়ে সালাম ফিরাবেন।

●দোয়া কুনুত পড়া কি ওয়াজিব ?

দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব নয়। কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সব সময় বিতির সালাতে দোয়া কুনুত পরতেন না। তাই আমাদের উচিত বিতির সালাতে কখনো কখনো দুয়া কুনুত ছেড়ে দেওয়া, কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নত এমনই। আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযী, মিশকাত ১২৯১-১২৯২ ।

●৩ রাকাত বিতির পড়ার নিয়মঃ

বিতির ৩ রাকাত দুইভাবে পড়া যায়।

প্রথম পদ্ধতি –

অন্যান্য সালাতের মতোই আপনি দুই রাকাত পড়বেন কিন্তু দুই রাকাতের যে বৈঠক সেখানে বসবেন না । কারণ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা বিতিরকে মাগরিবের মতো করে দিওনা। এখন দুই রাকাতের বৈঠকে না বসে আপনি ৩ রাকাত বিতিরকে মাগরিবের সালাতের সাথে পার্থক্য সৃষ্টি করে দিলেন। ২য় রাকাতে বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে ৩য় রাকাত পুরো করবেন, আর ৩য় রাকাতে আপনি ১ রাকাত বিতির পড়ার যে নিয়ম সেইভাবে কুনুত পড়বেন। এর পরে রাকাত পুরো করে সালাম ফিরাবেন।

আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, রাসুল (সাঃ) যখন ৩ রাকাত বিতরের সালাত আদায় করতেন তখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন না। একাধারে ৩ রাকাত পড়ে শেষ রাকাতে বসতেন ও তাশাহহুদ পড়তেন। এভাবে উমর (রাঃ) ও বিতর পড়তেন।( হাকেম : ১১৪০,বুখারি ও মিশকাত শরীফ এর বেতর অধ্যায়)

দ্বিতীয় পদ্ধতি –

প্রথম দু রাকাত সাধারণ নফল সালাতের মতো পড়বেন, বৈঠক করে সালাম ফিরাবেন । এর পরে ১ রাকাত বিতির পড়ার যে নিয়ম বর্ণনা করা হলো ঠিক সেইভাবেই ১ রাকাত পড়বেন, এই হলো ২+১= ৩ রাকাত বিতির ।

উল্লেখ্য – কারো অতিরিক্ত নফল সালাত পড়ার ইচ্ছা থাকলে সে ২ রাকাত পড়ার পর আরো দুই রাকাত পড়বে, এইভাবে ২ রাকাত, ২ রাকাত করে পড়ার পড়ে সবশেষে ১ রাকাত দিয়ে সবগুলোকে বেজোড়ে (বিতিরে) পরিণত করবে।

(বুখারি ও মিশকাত শরীফ এর বেতর অধ্যায়)

আল্লাহর নিকট থেকে রাসূল (সাঃ) এর উপর নাযিলকৃত অর্থাৎ সহীহ হাদীস পাওয়া গেলে তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা, সেই অনুযায়ী কর্তব্য পালন করা ঈমানী দায়িত্ব, কারণ সেটা ওহী। এমন কথা বলা যাবে না যে, এটা তো আমার যুক্তিতে টিকল না বা আমার বাপ-দাদাদের কখনও এমন কিছু বলতে বা করতে দেখিনি কিংবা আমার মাযহাবে এমনটি সমর্থন করে না’ কারন হয়তোবা এইটা আপনার কাছে নতুন তাই বলেই বাদ দিবার কোনও যুক্তি হয় না। আপনি কারও কথা বিশ্বাস না করে শুধুমাত্র নবীজী (সাঃ) কে বিশ্বাস এর উদ্দেশ্য নিয়ে বিষয়টা নিয়ে ভাবুন, গবেষণা করুন এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন তারপর মানুন কিন্তু এইটা হয় না অথবা এমন কিছু নেই বলে বিষয়টিকে একদম উড়িয়ে দিবেন না দয়া করে।

আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটাই, রাসূল (সাঃ) এর কথা সহীহভাবে আমাদের নিকট পৌছালে বিনা বাক্য ব্যয়ে তা মেনে নিতে হবে, তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কর্ম পালন করতে হবে। সেটা আমার নিকট যুক্তিতে টিকুক আর না টিকুক, আমার চারপাশে লোকজন সেটা মানুক আর না মানুক আমাকে রাসূল (সাঃ) এর কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতেই হবে এবং তার যথাসাধ্য অনুসরণ করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের রাসূল (সাঃ) এর সাহাবীদের মতো করে দ্বীন ইসলামকে বুঝার তৌফিক দান করুন এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন ।

*কারো পোস্ট ভালো না লাগলে পুরোটাই ইগনোর করুন ।আর কারো কোনও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন নইলে বুখারী অথবা মিশকাত শরীফের বিতির সালাত বিভাগ খুলে পড়ুন।জাযাকাল্লাহু খাইরান ।

জান্নাত - জাহান্নাম কতো বড় কি আছে এতে?

(((((জান্নাত - জাহান্নাম)))))

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

এতো বড় জান্নাত এতো নিয়ামত কি আল্লাহু এমনি দিবে আল্লাহু দুনিয়াতে সাবাই কে পরিক্ষা করবে। কোন বান্দা যখন দুনিয়ার তামাশাতে গাফেল হয়ে থাকে তখন আল্লাহু বিপদ দিয়ে রোগ গজব দিয়ে বান্দাকে জাগ্রত করায় তখন যদি কোন বান্দা বুঝে তওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসে পুরাপুরি ইসলামে প্রবেশ করে।

আর যদি কোন বান্দা ফিরে না আশে তাহলে আল্লাহ তাকে বিপদ এর পরে সুখ দেয় সম্পদ দেই অভাব দূর করে দেয়। এতে বান্দা যদি না বুঝে তওবা করে ফিরে না আশে সুকরিয়া না করে তখন আল্লাহু হঠাৎ করে নিয়ে নেন তওবা করার ও সময় দিবে না আর।

তাই আমরা সময় থাকতে পুরাপুরি যেন ফিরে আসতে পারি সঠিক পথে থেকে ভাল কিছু করতে পারি যেন আমাদের মাঝে নিফাকি চলে না আসে শয়তান চাই ধোকাই ফেলতে আমরা সবসময় আল্লাহুর কাছে আশ্রয় চাইবো।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

মুনাফিকের আলামতঃ

সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিমে আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন—

‘চারটি খাসলাত এমন যার সবগুলো কারও মধ্যে থাকলে সে খালেস মুনাফিক, আর যার মধ্যে তার কোনো একটি থাকবে সে যতক্ষণ না তা পরিত্যাগ করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকির একটি খাসলাতই থাকবে। (খাসলাত চারটি হচ্ছে এই)

যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় সে তাতে খিয়ানত করে, যখন কথা বলে মিথ্যা বলে,

যখন কোনো প্রতিশ্রুতি দেয় তা ভঙ্গ করে এবং যখন কারও সঙ্গে ঝগড়া করে গালাগালি করে।* (সহিহ বুখারি, হাদিস নং-৩৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-৮৮)

রাসূল সা. বলেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি। কথা বললে মিথ্যা বলা, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করা এবং আমানত রাখলে খেয়ানত করা* (সহীহ বুখারী ৩৩)।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

জান্নাত

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

জান্নাত কতো বড়??? সবার শেষে যে ব্যক্তি জান্নাতে যাবে তার জান্নাত হবে এই পৃথিবীর চেয়ে দশ গুন বড়।

তাহলে যারা দুনিয়াতে সফল পরোকালে সফল হবো ঈমান নিয়ে মৃত্যু বড়ন করতে পারবো তাদের জান্নাত আরও কতো গুন বেশি হবে এই পৃথিবীর চেয়ে?

আপনাক ভাবতে হবে এতো বড় জান্নাত আপনার এবং আপনার সহধর্মিণী যদি জান্নাতী হয় তার জন্য । আর জান্নাতে কোন কষ্ট নেই মৃত্যু নেই বয়স বাড়বে না কাপড় ময়লা হবে না আর আল্লাহুর যে নেয়ামত আছে তা তো আমরা দুনিয়াতে থেকে জিবনে কল্পনা করতে পারবো না।

জান্নাতের একজন হুর যদি পৃথিবীর দিকে তাকায় তাহলে গোটা পৃথিবীতে সুগন্ধতে ভরে যেতো।

তহলে যে নারীরা দুনিয়ার যাথাযথ হিজাব করবে ফরজ নামাজ আদায় করবে স্বামীর খেদমত করবে আরও কিছু দ্বায়িত্ব পালন করবে তারা জান্নাতের হুরদের চেয়ে বেশি দামি হবে তারা হবে জান্নাতের হুর গোলেমান দের সরদার।

জান্নাতে সাবাই ফরসা হবে জান্নাতে সবাই ৬০ হাত লম্বা হবে। দুনিয়াতে দাড়ি রাখতে হয় জান্নাতে কোন রকম দাড়ি লোম থাকবে না দুনিয়াতে পুরুষদের হাতে বেচ পড়া হারাম জান্নাতে হাতে বেচ থাকবে। জান্নাতে প্রতি শুক্রবার বাজারে যাবে সাবাই অফুরন্ত যা মন চাইবে তাই নিতে পারবে কোন রকম বিনিময় ছাড়া আর সেই বাজারে শিতল বাতাসে জান্নাতীদের সৌন্দর্য অনেক গুন বৃদ্ধি পাবে পরে তাদেরকে স্ত্রীরা দেখে বলবে তোমাদের তো অনেক গুন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে আর তারা বলবে তোমাদের ও অনেক গুন সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়েছে। জান্নাত হচ্ছে আরামের যায়গা।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

জান্নাতে আল্লাহুর দিদার হবে যা সবচেয়ে সেরা মুহুৎ।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

জাহান্নাম

♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣

জাহান্নাম কতো বড়?

রাসুল (সাঃ) বলেন একজন জাহান্নামির গায়ের চামড়া ৪২ হাত মোটা। একজন জাহান্নামির দাত হবে উহুদ পাহাড়ের সমান।

আর উহুদ পাহাড় হচ্ছে ৮ কিলোমিটার লম্বা ৪ কিলোমিটার প্রস্থ। যখন জাহান্নামির মুখে গরম পানি দেয়া হবে তখন সব গলে যাবে এতো বড় দাত থাকবে তখন ভয়ানক আকৃতি বুঝানো সম্ভব না।

♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣

রাসুল (সাঃ) বলেন একজন জাহান্নামির উরুর রান হবে ৩৯ কিলোমিটার লম্বা বায়জা পাহাড় এর সমান।

একজন জাহান্নামির ডানকাধ থেকে বাম কাধের দূরুত্ব একটা দূতগামি গোড়ার তিন দিন তিন রাতের পথ অথবা কানের লতি থেকে কাধ পযন্ত দুরুত্ব তিন দিন তিন রাতের পথ। একজন জাহান্নামির বসার জায়গা হলো

সারে চারশো কিলোমিটার এরিয়া।

♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣♣

নবীজ সাঃ বলেছেন এই পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পযন্ত সমস্ত মানুষ এবং জ্বীন যদি একসাথে জাহান্নামের ঢুকে তাহলে ঢুকতে সমস্যা হবে না তাহলে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পযন্ত যতো মানুষ আসবে আর প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন মানুষ যদি জাহান্নামি হয় তাহলে কতো মানুষ জাহান্নামি হবে আর জাহান্নাম কতো বড়।

কেয়ামতের দিন জাহান্নাম কে ৭০ হাজার ফেরেস্তারা টেনে নিয়ে যাবে তার এক একজন ফেরেস্তা এই পৃথিবীকে হাত দিয়ে উল্টাতে পারবে। জাহান্নাম কথা বলতে পারে। জাহান্নামে মানুষকে দেয়া হবে আর জাহান্নাম কে বলা হবে হালিম তালাত তুমি কি পূর্ণ তখন জাহান্নাম বলবে হালমিম মাজিদ আর কি কিছু আছে? তখন জাহান্নামে আল্লাহুর পা দিবে এবং জাহান্নাম এর কিছু অংশের মধ্যে ঢুকে চিপে আটোসাটো হয়ে যাবে আর জাহান্নাম বলবে কাত কাত কাত যথেষ্ট যথেষ্ট যথেষ্ট।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

আল্লাহু নিরাকার নন তার হাত আছে তবে তা কিরকম তা তিনি শুধু জানেন।

আল্লাহ জাহান্নাম থেকে ৩ অঞ্জলি মানুষ হাত দিয়ে উঠিয়ে জান্নাতে দিবে তবে ঈমান থাকবে যার তারাই শুধু হাতে আসবে।

যারা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করে জান্নাতে যাবে তারা তো পুরাপুরি সফল নয়। আমাদের উদ্দেশ্য হবে সরাসরি বিনা হিসাবে জান্নাত যাওয়ার

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

জাহান্নামিদের হাত পিছন দিকে বাধা থাকবে।

জাহান্নামে থাকবে আগুনে শাস্তি কারও কারও আগুন হবে টাকনু পযন্ত কারও হাটু পযন্ত কারো নাক পযন্ত। আগুনের পাহাড় থাকবে। পাহাড়ে উঠতে বলা হবে নামতে বলা হবে জাহান্নামে প্রতি ২৪ ঘন্টায় তাকে ৭০ বার আগুন দিয়ে জ্বালানো হবে।

জাহান্নামের উল্লেখ্যযোগ্য খাবার হচ্ছে যাক্কুম কাটা যুক্ত গাছ জাহান্নামিরা যাক্কুম গাছের কাটাযুক্ত ফল খেতে থাকবে যা ভিতরে যাবে না বাইরেও আসবে না শুধু কষ্ট পাবে মরবেও না বাচবেও না যাক্কুম এর ফল হবে শয়তানের মাথার মতো। তা অবশ্যই খারাপ হবে।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

জাহান্নামে মানুষকে শাস্তি দেওয়া জন্য আছে বিচ্ছু একবার দংশন করলে ব্যাথা থাকবে ৪০ বছর গাধার সমান।

জাহান্নামে শাপ আছে উঠের সমান একবার দংশন করলে ব্যাথা থাকবে ৪০ বছর।

জাহান্নামে মানুষকে মারার জন্য হাতুর আছে এটা দিয়ে ফেরেস্তারা মানুকে মারবে।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

রাসুল (সাঃ) নামাজে সালাম ফিরানোর আগে জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য দুআ পড়তেন।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

اَللَّهُـمَّ إِنيِّ أَعوُذُ بِكَ مِنْ عَذاَبِ جَهَنَّمَ،وَمِنْ عَذاَبِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْـنَةِ الْمَحْياَ وَالْمَماَتِ وَمِنْ فِتْـنَةِ الْمَسيِحِ الدَّجاَّلِ

উচ্চারন: আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উযুবিকা মিন আযাবি জাহান্নাম ওয়া মিন আযাবিল ক্ববর ওয়া মিন ফিতনাতিল মা’হয়া ওয়াল মামাত ওয়া মিন ফিতনাতি মাসিহিদ দাজ্জাল। (সহীহ মুসলিম ও মিশকাত। হাদীস নং- ৯৪০-৪১)

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ববরের আযাব থেকে মু্ক্তি দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জীবন মৃত্যুর কঠিন ফিতনা থেকে মুক্তি দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে মাসিহি দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি দান করুন

💜ইসলামিক জীবন বিধান 💜

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

যে সাজসজ্জা নারীর জন্য হারাম

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

নারীর সাজসজ্জার ব্যাপারে মহান

রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা

অনুমতি দিয়েছেন। তবে তা শুধুমাত্র

স্বামীকে দেখানোর জন্য আর বাকি সব

অবস্থায় নারী পর্দা মেনে চলবে। রাসূল

পাক (সা.) হাদিস দ্বারা প্রমাণিত,

স্বামী, বাবা এবং আপন ভাইয়ের সামনে

যাওয়া ইসলাম সমর্থন দিয়েছে। তাদের

সামনে একটু আকটু সাজসজ্জায় কোনো

বাধা নেই। তবে সাজসজ্জা শুধুমাত্র

স্বামীকে দেখানোর জন্যই প্রযোজ্য।

রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো,

ﺃَﻯُّ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟَّﺘِﻰ ﺗَﺴُﺮُّﻩُ ﺇِﺫَﺍ ﻧَﻈَﺮَ

‘কোন নারী উত্তম? তিনি (সা.) উত্তরে বললেন, যে স্বামীকে আনন্দিত করে যখন সে (স্বামী) তার দিকে তাকায়।’ (নাসাঈ হা/৩২৩১; মিশকাত হা/৩২২৭; ছহীহাহ

হা/১৮৩৮)।

এরপরও ইসলামে নারীর সাজের ব্যাপারে রয়েছে কিছু বিধি-নিষেধ। এমনকি ৪টি সাজকে পুরোপুরি হারাম করেছে।

চলুন তবে জেনে নিই ইসলামে নারীদের নিষিদ্ধ সাজসজ্জাগুলো কী কী-

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

ঘণ্টাযুক্ত নুপুর পরা: একদিন মা আয়েশা (রা.) এর নিকট কোনো এক বালিকা বাজনাদার নুপুর পরে আসলে তিনি তাকে বললেন: খবরদার! তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (সুনানে আবু দাউদ হাদিস :

৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদিস : ৫২৩৭)।

সহিহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হলো, শয়তানের বাদ্যযন্ত্র। (সহিহ মুসলিম হাদিস : ২১১৪)।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

কপালে টিপ পড়া: আসুন আজ আমরা জেনে নেই টিপ কোথা থেকে এসেছে?  আর কেনই বা রাসূল (সা.) নারীদের কপালের মধ্যেখানে বড় ধরনের টিপ পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে যখন

আগুনে নিক্ষেপ করার জন্য চড়ক স্থাপন করেছিল; তখন ফেরেশতারা অন্যপ্রান্ত থেকে বাধা দিচ্ছিল। তখন শয়তান এসে নমরুদের লোকেদের পরামর্শ দিয়েছিল, যখন ফেরেশতারা বাধা দেবে তখন তাদের সামনে

খারাপ নারীদের এনে রাখতে। যাদের কপালে টিপ থাকবে এবং তারা উলঙ্গ থাকবে। এতে করে রহমতের ফেরেশতারা দূরে সরে যাবে। তাই করা হলো। নারীদের উলঙ্গ করে এনে সামনে বসিয়ে দেয়া হলো। অতঃপর রহমতের ফেরেশতারা চলে গেল। তখন থেকে নারীদের কপালে টিপ দেয়া বিধানটি ইসলামে নিষিদ্ধ রয়েছে। কারণ এটি খারাপ কর্মে লিপ্ত

নারীদের প্রতিক হিসেবে ধরা হতো। তবে যে সব নারীরা কপালে টিপ দিয়ে থাকেন। তারা সবাই দুশ্চরিত্রা বা খারাপ এই কথাটি কোনো ভাবেই বলা যাবে না। তবে না জেনেই সাধারণত নারীরা এই কাজটি করে থাকেন। আশাকরি খারাপ দৃষ্টি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন। কপালে টিপ পড়বেন না।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

পরচুলা বা নকল চুল লাগানো: হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, যে নারী পরচুলা লাগায়, লাগিয়ে দেয় আর লাগাতে বলে। এছাড়া যে নারী গায়ে উল্কি আঁকে তাদেরকে অভিশাপ দেন রাসূল (সা.)। বর্তমানে নারীদেরকে

দেখা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশে অঙ্কন করে। যা ইসলামে পুরোপুরি নিষিদ্ধ কাজ। এমনকি এই পাপাচার মানুষকে পথভ্রষ্ট করে ফেলে।

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

ভ্রু প্লাক করা: স্বামী চাইলেও কপালের পশম চাঁছা ও ভ্রু প্লাক করা ইসলামে জায়েজ নেই। কেননা এর দ্বারা আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করা হয়। যার অনুমতি ইসলামে নেই। এভাবে মুখে বা হাতে সুই ফুটিয়ে নকশা আঁকা বা ট্যাটু করাও বৈধ নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিতহোক ওই নারীদের ওপর, যারা দেহাঙ্গে উল্কি উত্কীর্ণ করে এবং যারা করায়, যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে ও যারা সৌন্দর্য বৃদ্ধির মানসে দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করে এবং যারা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে। (বোখারি, হাদিস : ৪৮৮৬)।

তবে পুরুষের দাড়ি-গোঁফের মতো নারীর গালে বা ঠোঁটের ওপর পশম থাকলে তা তুলতে দোষ নেই।

💜ইসলামিক জীবন বিধান 💜

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸